ডেস্ক রিপোর্ট
আগামী মাসের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মূল ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এগুলোতে ভোটের ফলাফল নির্ধারণ করা কঠিন, রাজ্যগুলোতে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থন প্রায় সমান।
এ রাজ্যগুলোতে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এতটাই তীব্র- এখানে ভোটের ফলাফল যে কোনো দিকে যেতে পারে। জনমত জরিপগুলোতেও এসব রাজ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে খুব সামান্য ব্যবধান দেখা যাচ্ছে, যা সাধারণত ‘ভুলের সীমা’ বা মার্জিন অব এররের মধ্যে থাকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ৭টি রাজ্য ‘সুইং স্টেট’ বা ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট’ যা গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, রাজ্যগুলোর নির্বাচনী ফলাফল পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন এবং শেষ মুহূর্তের ভোটারদের সিদ্ধান্তই আসলে বড় ভূমিকা পালন করবে। এ ৭টি রাজ্যের প্রতিটির বর্তমান পরিস্থিতি, স্থানীয় সমস্যা এবং ভোটারদের মনোভাবের দিকে এক নজরে দেখা যাক।
১. পেনসিলভেনিয়া (১৯ ইলেকটোরাল ভোট) পেনসিলভেনিয়া এক সময় ডেমোক্রেটিকদের কাছে ছিল। তবে ট্রাম্প ২০১৬ সালে এটি রিপাবলিকানদের হাতে এনে দেন এবং ২০২০ সালে বাইডেন সেটি পুনরায় দখল করেন। রাজ্যটি শিল্প-প্রধান হওয়ায় চাকরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি এখানে বড় বিষয়।
২. জর্জিয়া (১৬ ইলেকটোরাল ভোট) ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শেষে এ রাজ্যটি বেশ আলোচনায় আসে। ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ডেমোক্রেটরা আশা করছেন, সংখ্যালঘু ভোটারদের সমর্থনে তারা জয়ী হতে পারেন।
৩. উত্তর ক্যারোলাইনা (১৬ ইলেকটোরাল ভোট) এটি প্রায়ই রিপাবলিকানদের দখলে থাকে, তবে এবার হ্যারিস আশা করছেন এখানে পরিবর্তন আসবে। রাজ্যের জনগণ দ্রুত বাড়ছে এবং বিভিন্ন জাতির মানুষ এতে যুক্ত হচ্ছেন, যা ডেমোক্রেটদের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।
৪. মিশিগান (১৫ ইলেকটোরাল ভোট) ২০১৬ সালে ট্রাম্প এ রাজ্যটি ডেমোক্রেটদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন, তবে ২০২০ সালে বাইডেন তা পুনরুদ্ধার করেন। তবে আরব-মার্কিন ভোটারদের সঙ্গে সাম্প্রতিক সম্পর্কের অবনতির কারণে হ্যারিসের জন্য কিছুটা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
৫. অ্যারিজোনা (১১ ইলেকটোরাল ভোট) ২০২০ সালে বাইডেন মাত্র ১০,৪৫৭ ভোটের ব্যবধানে এখানে জয়ী হন। মেক্সিকো সীমান্ত সংলগ্ন এই রাজ্যে অভিবাসন নীতি বড় ইস্যু। ট্রাম্প আশা করছেন, অভিবাসন ইস্যুতে হতাশ মানুষ তাকে সমর্থন করবে।
৬. উইসকনসিন (১০ ইলেকটোরাল ভোট) ২০১৬ সালে ক্লিনটনের এ রাজ্যে প্রচারণা না চালানোর কারণে ট্রাম্পের জয় সহজ হয়েছিল। তবে ২০২০ সালে বাইডেন সেখানে ডেমোক্রেটদের পক্ষে বিজয় অর্জন করেন।
৭. নেভাডা (৬ ইলেকটোরাল ভোট) নেভাডাতে ডেমোক্রেটদের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তবে ট্রাম্প এই রাজ্যে হোস্পিটালিটি শিল্পের কাজে যুক্ত হিস্পানিক ভোটারদের সমর্থনে লাভবান হতে পারেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ৭টি রাজ্যের ভোটের ফলাফলই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা নির্ধারণ করবে।
উল্লেখ্য, মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যে ভোটগ্রহণ হয় এবং ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। প্রতিটি রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট সংখ্যক ইলেকটোরাল ভোট থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট হতে হলে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে।