ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া মারাত্মক খরায় বিপর্যস্ত। বৃষ্টির অভাবে দেশ জুড়ে চাষবাসের হাল খারাপ। আর সেই কারণে দেশের শস্যের ভান্ডারও শেষের পথে। এই পরিস্থিতিতে নামিবিয়ার জনগণের একটা বড় অংশই দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারছেন না। পুরো বিষয়টি মাথা রেখেই এ বার দেশের জীবজন্তুদের মেরে দেশবাসীর মুখে খাবার তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নামিবিয়া সরকার। আর তাই হাতিসহ শত শত প্রাণী হত্যার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গত মাসে জাতিসংঘ জানিয়েছে যে নামিবিয়ার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর প্রতিক্রিয়ায় – নামিবিয়ার পরিবেশ, বন ও পর্যটন মন্ত্রক সোমবার ঘোষণা করেছে যে খরা ত্রাণ কর্মসূচির অংশ হিসাবে ৭২৩টি প্রাণীর মাংস বিতরণ করা হবে। এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে দেশে ক্রমবর্ধমান ক্ষুধা সংকট দূর করতে। নামিবিয়ার সরকার যে বড় জীবজন্তু মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছে হাতি, জলহস্তী, মহিষ থেকে শুরু করে জ়েব্রা, ইম্পালা।
নামিবিয়ার পরিবেশ, বন ও পর্যটন মন্ত্রকের জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মন্ত্রকের তরফে ৩০টি জলহস্তী, ৬০টি মহিষ, ৫০টি ইমপালা (হরিণ জাতীয় প্রাণী), ১০০টি নীল ওয়াইল্ডারবিস্ট, ৩০০টি জ়েব্রা, ৮৩টি হাতি এবং ১০০টি ইল্যান্ড (হরিণ জাতীয় প্রাণী)— মোট ৭২৩টি প্রাণীকে মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।প্রাণীগুলিকে জাতীয় উদ্যান এবং আশপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৬৮মিলিয়ন মানুষ এল নিনোর জেরে খরার প্রকোপে ভুগছে। এর জেরে পুরো অঞ্চল জুড়ে ফসল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ২০২৪ সালের গোড়ার দিকে শুরু হওয়া খরা খাদ্যের ঘাটতি সৃষ্টি করেছে এবং অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হল, দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল থেকে উষ্ণ সমুদ্রের পানি পশ্চিমে সরে গিয়ে কেন্দ্রীভূত হয় এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া উপকূলের কাছে। এর উল্টো প্রক্রিয়াটাই ‘এল নিনো’। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের যে অংশের অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকার কথা, সেটি উষ্ণ হতে শুরু করে। সমুদ্রের সেই অতিরিক্ত তাপ নির্গত হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের বাতাসে। তার জেরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। অর্থাৎ এল নিনো হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়বে, আবার এল নিনো দুর্বল হলে কমবে উষ্ণায়নও। কিন্তু এ বছর সেখানেই উল্টো পথে হেঁটেছে প্রকৃতি।