ডেস্ক রিপোর্ট
অভ্যাসগত দূষণকারীদের বিনিয়োগ না করতে ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে ব্র্যাক ব্যাংকের ‘ব্লুম ইনটু দ্য ফিউচার’ থিম নিয়ে সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট ২০২০ প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, উন্নয়ন হতে হবে টেকসই এবং সবুজ নির্ভর। আমাদের দেশে এই ধরনের টেকসই বিনিয়োগ যতটা না হয় তার চেয়ে বেশি শিল্প বিনিয়োগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেমন জাহাজভাঙাশিল্প প্রতিবছরই বড় হচ্ছে। কিন্তু এটি সবুজ শিল্পে রূপান্তরিত করা অসম্ভব। এটি একটি নদী ও সমুদ্র দূষণকারী শিল্প।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলো সাধারণত দূষণকারী শিল্পে বিনিয়োগ করে থাকে। যেগুলো প্রতিনিয়ত পরিবেশ এবং নদীকে দূষিত করে। এগুলোই আমাদের দেশে উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয়। দেশের সবুজ শিল্পায়ন বাড়াতে দূষণকারী শিল্পের বিনিয়োগ না করতে আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
এ ছাড়া তিনি বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের বিরুদ্ধে। উন্নয়নের একমাত্র সূচক জিডিপি প্রবৃদ্ধি নয়। এজন্য আমাদের ধারনায় এবং নীতিগত পরিবর্তন আনা দরকার। যেখানে থাকবে টেকসই উন্নয়ন এবং খুশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়ে নূরুন নাহার বলেন, সাসটেইনেবিলিটি রেটিং শুধু একটি ব্যাংকের পারফর্ম্যান্সের পরিমাপকই নয়, বরং তা দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাংকটির নেওয়া নানান উদ্যোগ, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতি, পরিবেশ সুরক্ষা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়গুলোও তুলে ধরে। বাংলাদেশ ব্যাংকে আমরা বিশ্বাস করি, একটি শক্তিশালী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে ব্যাংকিং প্র্যাকটিসে টেকসইতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেহেরিয়ার এম. হাসান বলেন, আধুনিক ব্যাংকিং জগতে টেকসইতা এখন আর শুধু একটি পছন্দই নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও। বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় উভয় ক্ষেত্রেই টেকসই ব্যাংকিং প্র্যাকটিসের প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পেরে ব্র্যাক ব্যাংক গর্বিত।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, আর্থিক খাতকে অবশ্যই মানুষ, পৃথিবী এবং দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির উদ্দেশ্য পূরণ করতে হবে। আমাদের এই রিপোর্টে সাসটেইনেবিলিটি বিষয়ে আমাদের ব্যাংকের উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিস রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, আমাদের রিপোর্টটি মূল্যবোধ-ভিত্তিক, দায়িত্বশীল এবং টেকসই ব্যাংকিং প্র্যাকটিসের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। সামাজিক এবং পরিবেশগত বিষয় বিবেচনা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রসারে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের রিপোর্টের এই বছরের থিম ‘ক্রম ইনটু দ্য ফিউচার’ একটি সমৃদ্ধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যেখানে টেকসইতা এবং আর্থিক সমৃদ্ধি পাশাপাশি অবস্থান করে। আমরা শুধু একটি ব্যাংক হিসেবেই বড় হচ্ছি না, বরং আমরা একটি বৃহৎ উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যতকেও নতুন রূপ দিচ্ছি।
এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারপারসন মেহেরিয়ার এম হাসান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেটিং অফিসার সাব্বির হোসেন, ব্র্যাক ব্যাংকের কর্পোরেট ও এসএমই ক্লায়েন্ট, স্টেকহোল্ডার এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।